ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার সভার মাঠ হিসাবে ব্রিগেড, ঢাকার রমনা বা লন্ডনের হাইড পার্কের থেকেও বিখ্যাত। শুধু জনসংখ্যা বা জনসমাগম নয়, ঐতিহ্যের বিকাশে ব্রিগেড অনেক এগিয়ে। এই ব্রিগেড দেখেছে ক্রুশচেভ বুলগানিনের সভা, দেখেছে ইন্দিরা গান্ধী থেকে জয়প্রকাশ নারায়নের জিপের ওপর দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করাও।
৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ঠিক আগেই এই ব্রিগেডেই এক জনসভায় বক্তৃতা অসম্পূর্ণ রেখেই মঞ্চ থেকে নেমে গিয়েছিলেন তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। সেই রাতেই স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তি যোদ্ধাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল ভারত। বাকিটা ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হল ৫০বছর পর সেই ব্রিগেডেই. বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধে মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত ভারতীয় গুণী জনদের শ্রদ্ধা জানানোর অনুষ্ঠানে।
(কলকাতার প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর সভার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।)

Mr Hasan Mahmud, Information Minister, Bangladesh Government Source: Partha Mukhopaddhyay
স্মৃতিতে ব্রিগেডের সেই জনসভা এখনও অটুট রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে। মুক্তি যুদ্ধের সময় তিনি তখন রাজ্যের উদীয়মান ছাত্র নেতা। মুক্তি যুদ্ধের জন্যে ত্রাণ সংগ্ৰহ করেছেন, পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে বনগাঁ পেট্রোপোলে।
৫০ বছর পর দিনগুলো এখনো চোখের সামনে দেখতে পান রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত বাবু। অন্যদিকে সেই মুক্তি যুদ্ধে বাবার কাছ থেকে শুনেছেন পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অত্যাচারের কথা।
সবটাই শুনেছেন অনেক পরে বাবা মায়ের স্মৃতিচারণে, তিনি, জয়া এহসান। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সেরা অভিনেত্রী এবং প্রযোজক। দু’ পার বাংলার জনপ্রিয় নায়িকা সংহতি জানাতে ব্রিগেডে হাজির ছিলেন কার্যত বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে সঙ্গে নিয়ে।
(কলকাতার প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর সভার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান অভিনেত্রী-প্রযোজক জয়া আহসান।)

Bangladeshi actor-producer Jaya Ahsan Source: Partha Mukhopaddhyay
আর সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত বা দিলীপ চক্রবর্তীর মত সাংবাদিকরা তখন নিতান্তই পেশার তাগিদে জড়িয়ে গিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সেই লড়াইয়ে। বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে যশোহরের মধ্যে ঢুকে তুলে আনতেন পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে এক জাতির প্রতিদিনের লড়াইয়ের গল্প।
জেনারেল নিয়াজী-জেনারেল অরোরার চুক্তির পর যে অসম যুদ্ধে জিতে গিয়েছিল স্বাধীনতা স্বপ্নে বুঁদ হয়ে থাকা এক জাতি। যেখানে হিন্দু-মুসলমান, কোনো ভেদ ছিল না। সবার পরিচয় তখন একটাই, বাঙালি।
৫০ বছর আগে বঙ্গবন্ধুর সেই বিখ্যাত ভাষণ, দাবায়ে রাখা যাবে না, বা ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা, লৌহমানবী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি সমর্থন থেকে বঙ্গবন্ধুর লন্ডন হয়ে দিল্লি, তারপর কলকাতাকে স্কিপ করে ঢাকায় ফেরা তারপর জনজোয়ারে ভেসে যাওয়া।
সবই উঠে এসেছে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তীতে আয়োজিত প্রদর্শনীতে। সেখানেই কার্যত আবেগাপ্লুত ভাস্কর রায়। ঠিক ৫০ বছর আগে এপার বাংলার বিখ্যাত শিল্পী অংশুমান রায় গেয়েছিলেন, শোনো একটি মুজিবরের থেকে। পরবর্তীতে যা লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে বাংলাদেশে। ব্রিগেডে ছিলেন অংশুমান পুত্র ভাস্কর-ও ।সোনার স্মৃতি সঙ্গে নিয়ে বাবার স্বপ্নের মুজিবরের অনুষ্ঠানে।
পার্থ মুখোপাধ্যায়ের পাঠানো পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
আরও দেখুনঃ