অস্ট্রেলিয়ায় নতুন একটি গবেষণায় জানা গেছে, কোভিড-১৯ এর জন্য দায়ী ভাইরাসটি ব্যাংক-নোটে এবং মোবাইল ফোন স্ক্রিনে ২৮ দিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।
ন্যাশনাল সায়েন্স এজেন্সি CSIRO এর বিজ্ঞানিরা দেখতে পেয়েছেন, কোভিড-১৯ এর জন্য দায়ী SARS-CoV-2 ভাইরাসটি নিম্ন তাপমাত্রায় বেশি দিন টিকে থাকতে পারে এবং সূক্ষ্ম ছিদ্র-বিহীন মসৃণ পৃষ্ঠতলে ও ভিনাইলে বেশি দিন টিকে থাকে।
সোমবার এই গবেষণাটি ভাইরোলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, প্লাস্টিকের ব্যাংক-নোটের তুলনায় কাগজের ব্যাংক-নোটে এই ভাইরাসটি বেশি দিন টিকে থাকে এবং কোনো কোনো পৃষ্ঠতলে এটি ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়েও ১০ দিন বেশি টিকে থাকে। ।
CSIRO এর চিফ একজিকিউটিভ ল্যারি মার্শাল বলেন, কোনো সারফেস বা পৃষ্ঠতলে ভাইরাসটি কতো দিন টিকে থাকতে পারে তা নিরূপণ করার মাধ্যমে বিজ্ঞানিরা আরও যথাযথভাবে এর সম্পর্কে পূর্বানুমান করতে করতে পারবেন এবং এর বিস্তার রোধ করতে পারবেন ও এভাবে কমিউনিটিকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারবেন।
অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিপেয়ার্ডনেস (ACDP) এর ডেপুটি ডিরেক্টর ডেবি ইগলস বলেন, হাত ধোওয়া এবং বিভিন্ন পৃষ্ঠতল পরিষ্কার রাখার মতো ভাল অভ্যাসগুলোর প্রতি পুনরায় গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে এই গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল দেখে।
তিনি আরও বলেন,
“২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়, যা কিনা প্রায় কক্ষ তাপমাত্রার সমান, আমরা দেখতে পেয়েছি যে, এই ভাইরাসটি অত্যন্ত তেজি ও প্রবল থাকে এবং মসৃণ পৃষ্ঠতল, যেমন, মোবাইল ফোন স্ক্রিনের গ্লাসে এটি ২৮ দিন টিকে থাকে।”
একই রকম পরীক্ষণে দেখা গেছে, পৃষ্ঠতলে ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ জীবাণু টিকে থাকে ১৭ দিন।
৩০ এবং ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আরও পরীক্ষণ চালানো হয়েছে। দেখা গেছে যে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে SARS-CoV-2 ভাইরাসের টিকে থাকার সময়কাল হ্রাস পায়।
ড. ইগলস বলেন,
“সারফেস ট্রান্সমিশনের বিষয়ে যথাযথভাবে বলা যায়, সংক্রমণের জন্য কী পরিমাণ ভাইরাসের প্রয়োজন এবং সারফেসের সঙ্গে সংস্পর্শের মাত্রা সম্পর্কে এখনো সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় নি। পৃষ্ঠতলে এই ভাইরাস কতো দিন সক্রিয় থাকে সে বিষয়টি জানা গেল। এটি উচ্চ সংক্রমণশীল এলাকাগুলোতে ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
ACDP ডিরেক্টর ট্রেভর ড্রিউ বলেন, এই গবেষণার ফলে শীতল পরিবেশে, যেমন, মিট প্রসেসিং ফ্যাসিলিটিগুলোতে, SARS-CoV-2 এর বিস্তার এবং কীভাবে এটি রোধ করা যাবে সে বিষয়ে সুবিধা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। জন-সমাগমের সীমা সম্পর্কে জানতে আপনার রাজ্যের নিষেধাজ্ঞাগুলো দেখুন।
আপনার মাঝে যদি সর্দি-কাশির (কোল্ড কিংবা ফ্লু) লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে ঘরে অবস্থান করুন এবং আপনার ডাক্তারকে কল করে কিংবা করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইন, 1800 020 080 নম্বরে কল করে টেস্টের ব্যবস্থা করুন।
আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।