করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারিতে ২০২০ সালে এর চিকিৎসায় বিতর্কিত হয়েছে ম্যালেরিয়া-প্রতিরোধী ড্রাগ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন।
প্রখ্যাত নিউ ইংল্যান্ড মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা-পত্রে বলা হয়েছে, এই ভাইরাসের চিকিৎসায় এটি কার্যকর নয়। এমনকি এটি কার্যকরী হওয়ার কাছাকাছিও নয়।মেলবোর্নের লা ট্রোব ইউনিভার্সিটির এপিডেমিওলজির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হাসান ভ্যালি বলেন আমরা আমাদের এই ,অনুসন্ধানে খুব আত্মবিশ্বাসী বোধ করতে পার
ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন বিশ্ব জুড়ে বিজ্ঞানিরা এবং ‘রিকভারি’ নামের একটি আন্তর্জাতিক গ্রুপ।এই ট্রায়ালের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বহু বিজ্ঞানি বলেছেন, এতে প্রাপ্ত ফলাফল দেখে তারা আশ্চর্য হন নি। ইউনিভার্সিটি অফ নিউক্যাসেলের স্কুল অফ মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এর ক্লিনিকাল ফার্মাকোলজির চেয়ার প্রফেসর জেনিফার মার্টিন বলেন, অন্যান্য ড্রাগের পাশাপাশি এই ড্রাগটি নিয়েও পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে। এখন অন্যদিকে নজর দেওয়ার সময় এসেছে।
তবে, চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন পুরোপুরি বাদ দেওয়ার পক্ষে নন সব চিকিৎসক।সুইনবার্নস সেন্টার ফর হিউম্যান সাইকো-ফার্মাকোলজির কনসালট্যান্ট অ্যানেসথেসিস্ট এবং অ্যাজাঙ্কট অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. মাইকেল কিন হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতা নিয়ে নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, গবেষণার ফল থেকে দাবি করা হয় যে, এই ড্রাগটি সাধারণভাবে কাজ করে না, আর এটা বলা যে, বিভিন্ন প্রমাণ থেকে দেখা যায়, প্যারাসুট কাজ করে না - একই বিষয়।
ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার জন্যই আসলে এই ড্রাগটি তৈরি করা হয়েছিল। তবে, করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির সময়টিতে জীবন রক্ষার জন্য এটি কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য প্রতিষেধক হিসেবে বিবেচিত হয় ও বাজারে এর চাহিদা দেখা যায়।
গত মার্চ মাসে এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশংসা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিজ্ঞানিরা মনে করেন, রাজনৈতিক কারণে এটি মনোযোগ পেয়েছে। তারা এর সত্যিকারের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখেন নি। মে মাসে মিস্টার ট্রাম্প দাবি করেন যে, তিনি হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের একটি প্রতিরোধমূলক ডোজ গ্রহণ করেছেন।
সম্প্রতি মিস্টার ট্রাম্প কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন। তখন দেখা যায়, তাকে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন দেওয়া হয় নি। বরং, অন্যান্য কতিপয় অপরীক্ষিত চিকিৎসা প্রদান করা হয় তাকে।
গোল্ড কোস্টের বন্ড ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর এভিডেন্স-বেসড হেলথকেয়ার এর প্রফেসর ডেভিড হেনরি একমত হন যে, এই চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক রাজনীতিকরণ রয়েছে।পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ক্ষেত্রে কী রকম ঝুঁকি এবং বায়াস বা পক্ষপাতমূলক প্রভাব রয়েছে সেগুলো যাচাই করে দেখা তার কাজ। প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্বাসযোগ্য কিনা সেটাও তিনি খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, এসব ফলাফল বিশ্বাসযোগ্য।