কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের স্বেচ্ছাসেবক হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা মহানগরের ফার্স্ট সিটিজেন হিসেবে বুধবার বিকেলে নাইসেডে গিয়ে করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এবার টানা সাতদিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন তিনি। ২৮ দিন পর ফের তাঁর উপর টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে।

West Bengal Minister Firhad Hakim

কলকাতায় কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের স্বেচ্ছাসেবক হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম Source: পার্থ মুখোপাধ্যায়

কলকাতায় কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের স্বেচ্ছাসেবক হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। প্রথম স্বেচ্ছাসেবক হয়েছেন বেলেঘাটার বিপ্লব জস। শেষ ধাপের ট্রায়াল চলছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন-এর। আর তারই অঙ্গ হিসেবে কলকাতায় এসেছে ভ্যাকসিনের ১ হাজার টিকা। টিকার কলকাতায় পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্যে আহ্বান জানানো হয়েছিল কলকাতা পুরসভার প্রশাসক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। তিনি নাইসেডে গিয়ে সেই টিকা নিয়েছেন।

বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ মধ্য কলকাতার,নাইসেডে পৌঁছন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ। তারপর তাঁকে ভ্যাকসিন সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানান বিশেষজ্ঞরা। তাঁর বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা হয়। এরপর টিকা দেওয়া হয় ফিরহাদ হাকিমকে। তারপর আধঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও শারীরিক সমস্যা হচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বুধবার তাঁকে প্রথম ডোজটি দেওয়া হয়েছে, ২৮ দিন পর আবার তাঁকে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। তারপর এক বছর তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

টিকা প্রয়োগের পরই ফিরহাদ বলেছেন,মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় জনতার জন্য কাজ করতে বলেন। সেই জন্যই মানুষের জন্য এগিয়ে আসা। আগেও বলছেন, এখনও বলছেন, এতে যদি প্রাণও যায়, তাও অসুবিধা নেই।একইসঙ্গে জানান, অক্সফোর্ড এবং বায়োটেকের মধ্যে কোন টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য তিনি রাজি হতেন? এক মুহূর্ত না ভেবেই জানান, বায়োটেকই নিতেন। কারণ দেশের বিজ্ঞানীদের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে। আমাদের টিকার উপরও আস্থা আছে।

উল্লেখ্য যে সমস্ত শহরে কোভ্যাক্সিনের টিকার ট্রায়াল চলছে,সেখানকার মেয়রদেরই প্রথম ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্যে আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু অনেক শহরের মেয়রই সেই সাহস দেখাতে পারছেন না, আবার অনেকের রয়েছে কোমর্বিডিটির সমস্যাও। তাই তাঁরাও পিছিয়ে যাচ্ছেন।কিন্তু ফিরহাদ সেই প্রস্তাব না ফিরিয়ে বুধবার সেই ভ্যাকসিন নিজের শরীরে প্রয়োগ করেছেন।

নাইসেড সূত্রে জানা গিয়েছে,ডিসেম্বরের শুরু থেকেই চালু হয়ে গিয়েছে কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় দফার পরীক্ষা। গোটা দেশে ২৫ হাজার ৮০০ জনের শরীরে ওই টিকা প্রয়োগ করা হবে। যার মধ্যে থাকবেন পশ্চিমবঙ্গেরও এক হাজার জন।ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে দায়িত্ব পাওয়া দেশের ২৮ সংস্থার অন্যতম নাইসেডের তরফে ভ্যাকসিনগুলি সংরক্ষণ করা হয়েছে মাইনাস ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায়।

এদিকে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেছেন,তাঁকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।তাঁর সামান্য সমস্যা হলেও কোনও ব্যাপার না।এমনকী মানুষের জন্যে তাঁর যদি প্রাণও যায়,তাতেও কিছু যায় না ফিরহাদ হাকিম-র।

এর আগেও ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাস বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।তাই এর সমাধানসূত্র বের করতে গিয়ে যদি তাঁকে প্রাণও দিতে হয়,তিনি তাতেও রাজি।মানুষকে এভাবেও তো সেবা করা যায়। চিকিৎসকরা আগেও ফিরহাদের শারীরিক পরীক্ষা করেছিলেন। তাঁর কোনও কোমর্বিডিটি ছিল না। পেটের সামান্য সমস্যা ছাড়া হার্ট, ফুসফুসের মতো অঙ্গও একেবারে স্বাভাবিক হয়েছে।


Share

Published

By Partha Mukhapadhdhaya
Presented by Abu Arefin

Share this with family and friends