সম্প্রতি একটি সংশোধিত নীতিমালা প্রকাশ করেছে কানাডা। ফিরে আসা আশ্রয়প্রার্থীরা যারা পোর্টস অফ এন্ট্রি অতিক্রম করে দেশটিতে প্রবেশ করতে চায়, তাদের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীর সময়ের নীতিমালার অবসান ঘটাচ্ছে কানাডা।
২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত অন্তত ৫৪৪ জন সম্ভাব্য শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠিয়েছে কানাডা।
এ বিষয়ক নীতিমালাটির এখনই কেন অবসান ঘটানো হচ্ছে এবং আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে যারা কোভিড-টিকা নেয় নি, তাদের প্রতি কোয়ারেন্টিনের কোনো শর্ত প্রযোজ্য হয় কিনা, এসব নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের তাৎক্ষণিক কোনো জবাব দেয় নি কানাডা সরকার।
কানাডা বলেছে, করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীর এই সময়টিতে স্বাস্থ্য-সুরক্ষার জন্য সেই পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল। তবে, শরণার্থী-সমর্থকরা যুক্তি দিচ্ছেন যে, আশ্রয় দাবি করার উদ্যোগকে ‘ডিসক্রেশনারি ট্রাভেল’ বা স্বেচ্ছাধীন ভ্রমণ হিসেবে গণ্য করা যায় না। প্যান্ডেমিকের সময়ে অন্যান্যদের মাঝে পেশাদার অ্যাথলেটদের জন্য কানাডা যে ক্লাস একজেম্পশন বা ছাড় দিয়েছিল, সে বিষয়ের প্রতিও তারা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
এই নীতিমালা নিয়ে সরকারকে আদালতে নিয়ে গেছে কানাডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ রিফিউজি ল’ইয়ার্স। এর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও শরণার্থী বিষয়ক আইনজীবি মাউরিন সিলকফ বলেন,
“আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাসমূহের সঙ্গে আরও সঙ্গতিপূর্ণ হতে শরণার্থীদের জন্য গৃহীত উদ্যোগগুলো দেখাটা স্বস্তির বিষয়। আর, আমি মনে করি, সবটা জুড়ে এটি পরিষ্কার যে, জনস্বাস্থ্য ও শরণার্থীদের সুরক্ষার বিষয়গুলো পাশাপাশি অবস্থান করতে পারে।”
মিজ সিলকফ বলেন, কানাডা পর্যটকদেরকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে; কিন্তু, সুরক্ষা প্রার্থীদেরকে প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছে। এটি অর্থবহ নয়।
ফেরত যাওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে অজানা সংখ্যক লোককে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ডিটেনশনে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাখা হয়েছে। শরণার্থীদের আইনজীবিরা জানিয়েছেন, অন্তত দু’জনকে ডিপোর্ট বা বহিষ্কার করা হয়েছে।
এই নীতিমালা চালু করার সময় থেকে একজেম্পশন বা ছাড় লাভের সুযোগ ছিল। আগস্ট মাসে কানাডা আরও বেশি সংখ্যক ফেরত আসা আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণ করা শুরু করে এবং তাদেরকে শরণার্থী হিসেবে আবেদনের সুযোগ দেয়, যা “ম্যানেজড অ্যাপ্রোচ টু রিওপেনিং দ্য বর্ডার” নামে পরিচিত।
মাউরিন সিলকফ এক টুইটে বলেন, “প্যান্ডেমিক বর্ডার বার যা শরণার্থীদেরকে কানাডায় প্রবেশে প্রতিবন্ধক হিসেবে ছিল তা অপসারণ করা হচ্ছে। এটি অসহায় ও প্রান্তিক জনগণের জন্য ভয়ানক পরিণতি বয়ে নিয়ে এসেছিল। আমরা জানি যে, জনস্বাস্থ্য ও শরণার্থীদের সুরক্ষা পাশাপাশি থাকতে পারে।”
তবে, সমর্থকরা বলেছেন, এই সুযোগ শুধু তাদের জন্যই উন্মুক্ত যারা এ সম্পর্কে সচেতন কিংবা যাদের আইনী উপদেষ্টা কানাডার পরিবর্তনশীল সিস্টেম সম্পর্কে জানেন। গত মাসে আদালতে সরকার তাদের নীতিমালার পক্ষাবলম্বন করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার একটি সেফ থার্ড কান্ট্রি এগ্রিমেন্ট আছে, যার অধীনে আশ্রয়প্রার্থীরা যারা অফিশিয়াল পোর্টগুলো অতিক্রম করার চেষ্টা করে, তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সেই এগ্রিমেন্টটি, যেটিকে দু’বার চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, সেটি এখনও বহাল আছে। এখন সেটি কানাডার সুপ্রিম কোর্টে উত্থাপিত হতে পারে।